OrdinaryITPostAd

How to Perform Wudu/Oju | কিভাবে সঠিকভাবে ওযু করবেন? অজু করার নিয়ম

আপনি কিভাবে সঠিকভাবে ওযু করতে পারেন তো? ওজু, বা ধোয়া এবং পরিষ্কার করার আচার যা নামাজের আগে সম্পন্ন হয়, অজু  মুসলিম বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা আপনাকে এই গুরুত্বপূর্ণ এবং শুদ্ধ অজু  করণের প্রতিটি দিকের মাধ্যমে ধাপে ধাপে গাইড করব, যাতে আপনি আপনার নামাজের সময়ের আগে নিজে থেকে অজু  করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারেন।

অজুর ফরজ কয়টি ও কিকি ? 

ওযুতে মোট ৪ টি  ফরজ বা অবশ্য করণীয় কাজ রয়েছে। যা না করলে ওযু হবে না। আসুন ওযুর ফরজগুলো জেনে নেই।
  1. সমস্ত মুখ ভালভাবে ধৌত করা।
  2. দুই হাতের কনুইসহ ভালভাবে ধৌত করা।
  3. মাথা চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ্ করা।
  4. দুই পায়ের টাকনুসহ ধৌত করা।

অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি

অজু ভাঙ্গার কারণ ৭ টি । নিচে দেওয়া এই সাতটি কারণ হতে যে কোন একটি হলে অজু মাকরূহ  বা ভঙ্গ হয়ে যেতে পারে

  1. মূত্র ত্যগের রাস্তা দিয়ে কিছু নির্গত হলে।
  2. মুখ ভরে বমি হলে।
  3. শরীরের ক্ষতস্থান হতে কোন প্রকার রক্ত, পনি বের হওয়া।
  4. থুতুর সাথে সমান ভাবে রক্ত বের হওয়া।
  5. শুয়ে অথবা হেলান দিয়ে ঘুমালে।
  6. মাতাল অথবা অচেতন হলে।
  7. নামাজে উচ্চ স্বরে হাসলে।

 এতে নামাজ ও অজু দুটোই নষ্ট হয়।

অজুর সুন্নাত কয়টি ও কিকি ? 

ওযুর সুন্নাত ১৪ টি। এগুলো হলো –
  1. নিয়ত করা।
  2. বিসমিল্লাহ বলে ওযু শুরু করা।
  3. হাতের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা।
  4. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করা।
  5. মিসওয়াক করা।
  6. ৩ বার কুলি করা।
  7. নাকে পানি দেওয়া তিনবার।
  8. পুরো মুখমন্ডল তিনবার ধৌত করা।
  9. দু হাত কনুই সহ তিনবার ধোওয়া।
  10. সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা।
  11. উভয় পা টাখনু সহ তিনবার ধৌত করা।
  12. পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা।
  13. এক অঙ্গ শুকানোর পূর্বে অন্য অঙ্গ ধৌত করা।
  14. ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ওযুর কাজ গুলো সম্পূর্ন করা।

চিত্র সহ অজু দেখান হলঃ

অজু করতে কিভাবে বস্তে হবে


অজুর প্রয়োজনীয় দোয়া

ওযুর নিয়ত

ওযুর নিয়ত: উচ্চারনঃ নাওয়াইতু আন আতাওয়াজ্জায়া লিরাফয়িল হাদাসি ওয়া ইস্তিবাহাতা লিছছালাতি ওয়া তাকাররুবান ইলাল্লাহি তা’য়ালা।
অর্থ: আমি ওযুর নিয়ত করছি যে নাপাকি দূর করার জন্য বিশুদ্ধরূপে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্য এবং আল্লাহ তা’য়ালা।

অযুর দোয়া

বাংলা উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম। ওয়াল হামদুলিল্লাহি আলা দ্বীনিল ইসলাম। আল ইসলামু হাক্কুন। ওয়াল কুফরু বাতিলুন। ওয়াল ইসলামু নুরুন। ওয়াল কুফরু জুলমাত।
অর্থ: মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ তায়ালার নামে আরম্ভ করছি। আমি দ্বীন ইসলামের উপর আছি। তাই আল্লাহর জন্য যাবতীয় প্রশংসা।নিশ্চই ইসলাম সত্য ও কুফুর বাতিল এবং ইসলাম আলো ও কুফুর অন্ধকার।
How to Perform Wudu/Oju  | কিভাবে সঠিকভাবে ওযু করবেন?  অজু করার নিয়ম




 
How to Perform Wudu/Oju  | কিভাবে সঠিকভাবে ওযু করবেন?  অজু করার নিয়ম

How to Perform Wudu/Oju  | কিভাবে সঠিকভাবে ওযু করবেন?  অজু করার নিয়ম

How to Perform Wudu/Oju  | কিভাবে সঠিকভাবে ওযু করবেন?  অজু করার নিয়ম


অজুর শেষের দোয়া

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
বাংলা উচ্চারণ : ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’
অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।’ (মুসলিম, মিশকাত)

এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,

,مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِغُ أَوْ فَيُسْبِغُ الْوَضُوءَ ثُمَّ يَقُولُ : أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ، إِلا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ
অর্থ: তোমাদের যে ব্যাক্তি কামিল বা পূর্ণরূপে উযূ করে এই দোয়া পাঠ করবে, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর গোলাম ও রাসুল।’ তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যাবে এবং যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতের প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম ২৩৪)

অজু করার নিয়ম কয়টি ও কি কি ? 

অজু করার দুটো পদ্ধতি রয়েছে:
  1. ফরয পদ্ধতি
  2. মুস্তাহাব পদ্ধতি

ফরয পদ্ধতি

  1. সমস্ত মুখমণ্ডল একবার ধৌত করা। এর মধ্যে গড়গড়া কুলি ও নাকে পানি দেয়াও অন্তর্ভুক্ত হবে।
  2. কনুই পর্যন্ত হাত একবার ধৌত করা।
  3. সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা। এর মধ্যে কানদ্বয় মাসেহ করাও অন্তর্ভুক্ত হবে।
  4. দুই পায়ের টাকনু পর্যন্ত একবার ধৌত করা।
  5. এই ক্রমধারা বজায় রাখা। অর্থাৎ প্রথমে মুখমণ্ডল ধৌত করবে, এরপর হাতদ্বয় ধৌত করবে, এরপর মাথা মাসেহ করবে, এরপর পা দুইটি ধৌত করবে।
  6. পরম্পরা রক্ষা করা। অর্থাৎ উল্লেখিত অঙ্গগুলো পরম্পরা রক্ষা করা। অর্থাৎ উল্লেখিত অঙ্গগুলো ধৌত করার ক্ষেত্রে পরম্পরা রক্ষা করা; যাতে করে 
  7. একটি অঙ্গ ধোয়ার পর অপরটি ধোয়ার মাঝখানে স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘ সময়ের বিরতি না পড়ে।

মুস্তাহাব পদ্ধতি

যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহতে বর্ণিত হয়েছে। পদ্ধতি নিম্নরূপ:

  1. ব্যক্তি নিজে পবিত্রতা অর্জন ও হাদাস দূর করার নিয়ত করবে। তবে নিয়ত উচ্চারণ করবে না। সকল ইবাদতের ক্ষেত্রেই নিয়তের স্থান অন্তর। 
  2. বিসমিল্লাহ বলবে।
  3. হাতের কব্জিদ্বয় তিনবার ধৌত করবে। 
  4. এরপর ৩বার গড়গড়া কুলি করবে (গড়গড়া কুলিঃ মুখের ভেতরে পানি ঘুরানো)। বাম হাত দিয়ে ৩ বার নাকে পানি দিবে ও তিনবার নাক থেকে পানি ঝেড়ে ফেলা।
  5. মুখমণ্ডল তিনবার ধৌত করবে। মুখমণ্ডলের সীমানা হচ্ছে- দৈর্ঘ্যে মাথার স্বাভাবিক চুল গজাবার স্থান থেকে দুই চোয়ালের মিলনস্থল ও থুতনি পর্যন্ত। প্রস্থে ডান কান থেকে বাম কান পর্যন্ত। ব্যক্তি তার দাঁড়ি ধৌত করবে। যদি দাঁড়ি পাতলা হয় তাহলে দাঁড়ির ওপর ও অভ্যন্তর উভয়টা ধৌত করবে। আর যদি দাঁড়ি এত ঘন হয় যে চামড়া দেখা যায় না তাহলে দাঁড়ির ওপরের অংশ ধৌত করবে, আর দাঁড়ি খিলাল করবে।
  6. এরপর দুই হাত কনুই পর্যন্ত ৩বার ধৌত করবে। হাতের সীমানা হচ্ছে- হাতের নখসহ আঙ্গুলের ডগা থেকে বাহুর প্রথমাংশ পর্যন্ত। ওজু করার আগে হাতের মধ্যে আঠা, মাটি, রঙ বা এ জাতীয় এমন কিছু লেগে থাকলে যেগুলো চামড়াতে পানি পৌঁছাতে বাঁধা সৃষ্টি করে সেগুলো দূর করতে হবে।
  7.  অতঃপর নতুন পানি দিয়ে মাথা ও কানদ্বয় একবার মাসেহ করবে। মাসেহ করার পদ্ধতি হচ্ছে- পানিতে ভেজা হাতদ্বয় মাথার সামনে থেকে পেছনের দিকে নিবে; এরপর পুনরায় যেখান থেকে শুরু করেছে সেখানে ফিরিয়ে আনবে। এরপর দুই হাতের তর্জনী আঙ্গুল কানের ছিদ্রতে প্রবেশ করাবে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে কানের পিঠদ্বয় মাসেহ করবে। আর মহিলার মাথার চুল ছেড়ে দেয়া থাকুক কিংবা বাঁধা থাকুক; মাথার সামনের অংশ থেকে ঘাড়ের ওপর যেখানে চুল গজায় সেখান পর্যন্ত মাসেহ করবে। মাথার লম্বা চুল যদি পিঠের ওপর পড়ে থাকে সে চুল মাসেহ করতে হবে না।
  8. এরপর দুই পায়ের টাকনু পর্যন্ত ধৌত করবে। টাকনু বলা হয় পায়ের গোছার নিম্নাংশের উঁচু হয়ে থাকা হাড্ডিদ্বয়কে।

অযু সমাপ্ত করার পর কালেমা শাহাদাৎ পড়া মুস্তাহাব:

'আশহাদু আল-লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা- শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ' (অর্থ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি এক, অদ্বিতীয় এবং আমি

আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তাহাঁর বান্দা ও প্রেরিত রাসূল ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন